
প্রকাশিত: Thu, Jul 13, 2023 3:40 PM আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 3:07 AM
আল মাহমুদকে নিয়ে
কাকন রেজা : আল মাহমুদকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। কেউ কেউ তাকে সুবিধাবাদী বলে আখ্যায়িত করেন। বলেন মৌলবাদের পক্ষের কথা। যারা বলেন তারা খোদ কোনপক্ষের তা সকলে জানলেও, তারা না জানার ভান করেন। তারা হয়তো ‘ফ্যাসিবাদ’ শব্দটির মানে জানেন না, জানলে আল মাহমুদ সম্পর্কে এমন করে বলতেন না। মূলত যোগ্যতাহীনদের যখন কোনো যোগ্য স্থানে বসিয়ে দেয়া হয় এবং তা তোষামুদির জোরে, তখন তারা লিজেন্ডদের অপমান-অপদস্থের রাস্তা বেছে নেন। প্রভুরা যাকে অপছন্দ করেন, তার বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা সব-সময় লকলকিয়ে থাকে। সাপের চেরা জিভের মতন, ছোবল মারার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সবসময়। কবির এবারের জন্মদিনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
ইংরেজ কবি টেড হিউজকে এমন উদাহরণে সব-সময় সামনে আনি আমি। প্রেমিকা কবি সিলভিয়া প্লাথ এবং নিজ স্ত্রীকে হত্যা বা আত্মহত্যার প্ররোচনা দেবার অভিযোগ রয়েছে হিউজের বিরুদ্ধে। নারীবাদীরা তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, কিন্তু কেউ তার লেখাকে অবজ্ঞা করেননি। কবি হিউজকে যথাযোগ্য সম্মান দেয়া হয়েছে। যার ফলেই আজো টেড হিউজ ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি।
আমরা আল মাহমুদকে অপদস্থ করতে গিয়ে নিজেদের সাহিত্য-সংস্কৃতিকে অপদস্থ করছি, অবজ্ঞা করছি। একসময় নজরুলকে নিয়ে এমন কথা হয়েছে। এখনো নজরুল অবহেলিত। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় নজরুলের তুলনা-মূলক অবস্থান দেখলেই তা বোঝা যায়। এসব করেই আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির অবস্থা এমন একটা জায়গায় দাঁড় করিয়েছেন তথাকথিত ফাঁপর ও আয়নাবাজ’রা। তাদের কীর্তিতেই তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন এখন হিরো আলম। আর হিরো আলমের সাথেও তাদের পেড়ে উঠতে রাজনৈতিক শক্তির সহায়তা নিতে হচ্ছে। এনাদের জন্য সত্যিই করুণা হয়।
করুণা হয় কারণ, এরা নিজেরাও জানেন না, তারা কী বলতে চান। একজনের লেখা দেখলাম, তিনি আল মাহমুদকে কার থেকে যেন ছোট কবি বলেছেন। আবার নিজেই বলেছেন, মাপামাপি তার পছন্দ না। বেচারাকে আমি চিনতাম না। সে অর্থে অবশ্য আমি অনেককেই চিনি না, প্রয়োজন বোধ করি না বলে। কিন্তু তার মন্তব্যটা আরেকজনের ভায়া হয়ে আমার নিউজ-ফিডে এলো। কৌতূহল নিয়ে তার টাইম-লাইন ঘুরতে গিয়ে দেখি উনিও একজন ‘কবি’। তার ‘কবিতা’ পড়ে আমার প্রায় চেয়ার থেকে পড়ে যাবার উপক্রম। যে ভদ্রলোক ‘ব্যস্ততা’ লিখতে ভুল করেন, তিনিও লিখেন কবিতা। আবার আল মাহমুদকে মাপামাপির ধৃষ্ঠতাও দেখান। তাকে বলতে ইচ্ছে করছিলো, ভাই কবিতাকে এবার মাফ করে দেয়া যায় না।
অবস্থা এমনি দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের এক নামকরা প্রকাশনা সংস্থা থেকে বই করেছেন একজন। তিনিও ‘কবি’। তার বইকেও ‘কবিতা’র বই হিসেবে ছাপিয়েছে সেই প্রকাশনা সংস্থাটি। বই প্রকাশ করতে নাকি লাখ খানেকের মতন খরচ গেছে। সেই ‘কবি’র ধারণা নামী-দামী সংস্থা থেকে বই বের না হলে নাকি ঠিক ‘কবি’ ট্যাগটা লাগে না। তার খসড়া অর্থাৎ অসম্পাদিত কবিতা দেখার সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্য যাই বলুন, আমার হয়েছিলো। আমি জানি তিনি কী জিনিস। সেই কবিও অন্যের কবিতার সমালোচনা করেন। সমালোচনাটা বাঙালদের ক্ষেত্রে এখনো শিল্পিত হয়ে ওঠেনি। সমলোচনার নামে যা হয় তা হলো ‘ভালোচনা’ না হলে ‘কালোচনা’। এর বাইরে কিছু নেই। লেখক: সাংবাদিক। কলামিস্ট
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
